আমি মো. নাসির
একজন আহত জুলাই যোদ্ধা
আমি পদপরিচয়ে বড়ো কোনো লোক নই, একজন আহত জুলাই যোদ্ধা মাত্র । সৃষ্টিকর্তার অপার মেহেরবাণিতে আমি আজও বেঁচে আছি, মরে যেতে পারতাম, দেশ ও দেশের মানুষ ভালোবাসে বলে মরিনি। ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট বেলা দেড়টা নাগাদ যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের মারমুখী আক্রমণের শিকার হই, প্রচন্ড ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। আমার চোখের সামনে দেশের একাধিক জুলাই যোদ্ধা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আমি মর্মান্তিকভাবে আহত হই। জানি না শেষপর্যন্ত কেমন করে বেঁচে গেলাম । হুস হলে দেখতে পাই মুগ্ধা সরকারি হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছি। অবশেষে আল্লাহর অপার করুণায় বেঁচে গেলাম। ফ্যাসিস্ট শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করা আমর জীবনে একটি বড়ো অর্জন। সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ফ্যাসিস্ট শাসকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে না পারলেও সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের দেশদরদী প্রিন্সিপাল মো মাহবুবুর রহমান মোল্লা স্যারের প্রেরণা ও পরামর্শে অনেক শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা এই ঐতিহাসিক জুলাই যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছেন। বেশ কজন জুলাই যোদ্ধা নিহত হয়েছেন, আমিও মরতে মরতে বেঁচে গেছি।
প্রিন্সিপাল মো মাহবুবুর রহমান মোল্লা স্যারের কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ। আমি বেঁচে আছি, প্রাণ ও গৌরব নিয়েই বেঁচে আছি। আমাকে দেশ মূল্যায়ন করেছে, জুলাই যোদ্ধা অভিধায় সম্মানিত করেছে -এর চেয়ে বেশি কিছু আমার পাওয়ার নেই।
জুলাই যোদ্ধা হিসেবে মাসিক ভাতা, সম্মাননা স্মারক আমার জন্য প্রাপ্য হয়েছে। আমার এই প্রাপ্তি ও সম্মানের মূলে বড়ো অবদান প্রিন্সিপাল মো. মাহবুবুর রহমান মোল্লা স্যারের।
২০২৫ সালের ৫ই আগস্ট, মঙ্গলবার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা জেলা প্রশাসন আয়োজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ এর ঢাকা জেলার শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমি আমন্ত্রিত হয়ে জুলাই যোদ্ধা হিসেবে সম্মাননা গ্রহণ করি।
বাংলাদেশের অন্তরবর্তী সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূস স্যার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য প্রদান করেন। জুলাই যোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক সম্মানিত উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
আমার অপার ভালোবাসা এই দেশের জন্য, বাংলাদেশের অন্তরবর্তীকালীন সরকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস স্যারের জন্য এবং প্রিন্সিপাল মো মাহবুবুর রহমান মোল্লা স্যারের জন্য।