প্রতিষ্ঠাকাল : ২০২০
সভাপতি : প্রিন্সিপাল মো. মাহবুবুর রহমান মোল্লা
মডারেটর : মো. ইসমাইল হোসেন জাবেদ
কো- অর্ডিনেটর : মো. রাসেল
স্মৃতি সংরক্ষণের সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম হচ্ছে ফটোগ্রাফি কিংবা আলোকচিত্র। সুন্দর মুহূর্তগুলো সুন্দরভাবে ক্যামেরায় বন্দী করার প্রয়োজনীয়তাকে ঘিরে গঠন করা হয়েছে ফটোগ্রাফি ক্লাব। হাজারো মুহুর্তের হাসি কান্নার ধারক হবে আমাদের সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ ফটোগ্রাফি ক্লাব।
জীবন আগের বোধের জায়গায় নেই। মানুষের জীবনধারায় এখন অসংখ্য প্রয়োজন এবং অগণিত বৈচিত্র্য এসে উপস্থিত হয়েছে । সেই দাবি পূরণের প্রয়োজনে জীবনের চেহারা পাল্টে গেছে। ফটোগ্রাফি একালে ছবির বিলাস নয়। ছবির মাধ্যমে একদিকে যেমন শিল্পীর সাধনা চলে, অন্যদিকে তেমনি অনেক প্রয়োজনীয় তথ্যও সংগৃহীত ও সংরক্ষিত হয়।
ছবি ইতিহাসেরও ধারক। একজন ফটোগ্রাফার শিল্পী ও মনোযোগী গবেষক। তিনি অনুভব, অনুভূতির দৃশ্য সন্ধান করেন আর পেলেই তা ক্যামেরা বন্দী করেন। অন্যদিকে ছবির মাধ্যমে অনেক জ্ঞানের তথ্যও সংরক্ষিত হয়। একালের জ্ঞানচর্চায় আলোকচিত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই প্রয়োজনের দিকটি তাই শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শেখা উচিত । সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ শিক্ষার্থীদের শিল্পের এই দারাটি হাতে কলমে শেখাবার উদ্দেশ্য গড়ে তুলেছে ফটোগ্রাফি ক্লাব।ক্লাবটি ইতোমধ্যে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সন্তোষজনকভাবে আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। এরই মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী ক্লাবটির সদস্যপদও গ্রহণ করেছে এবং তারা রীতিমতো ফটোগ্রাফি অনুশীলন করছে।
স্কুল কলেজের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের আলোকচিত্র সম্পর্কিত প্রতিভাকে বিকশিত করার জন্য প্রয়োজন কিছু সঠিক দিকনির্দেশনা। ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের এই প্রতিভাকে সবার তুলে ধরার কাজটিই করে থাকে ফটোগ্রাফি ক্লাব। আমরা সবাই বিভিন্ন সুন্দর জায়গায় ঘুরতে গেলে কিংবা সুন্দর কোনো মুহুর্ত দেখলে সেটাকে ক্যামেরাবন্দি করতে চাই। কিন্তু সঠিক ভাবে ফ্রেমবন্দি করার জন্য প্রয়োজন ফটোগ্রাফির কম্পজিশন সম্পর্কিত সঠিক জ্ঞান।ক্লাবের ক্ষুদে ফটোগ্রাফারদের আলোকিত আলোকচিত্র শিল্পী হিসেবে গড়ে তোলাই ক্লাবের প্রধান উদ্দেশ্য। সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল ও ফটোগ্রাফি ক্লাবের সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ফটোগ্রাফি একটি অভিনব শিল্প। শিক্ষার্থীদের এই শিল্পটি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন জরুরি।
জীবনের অভিজ্ঞতাকে অনেক সময় ফটোবন্দী রাখা সম্ভব। ফটোগ্রাফির মাধ্যমে সমাজ, রাষ্ট্র ও ব্যক্তিগত জীবনের অনেক ঘটনাবহুল সময়কে ধারণ করে রাখার সুযোগ থাকে।’ ক্লাব মডারেটর ও প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক মো. ইসমাইল হোসেন জাবেদ বলেছেন, ‘ দেশসেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা বেশ মেধাবী ও যুগসচেতন। তাদের উচিত ফটোগ্রাফির মতো শিল্পটি শিখে ফেলা। জীবনের নানা সময়ে ছবি তুলে সংগ্রহ করা প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এছাড়া ফটো শিল্প অতীতে স্মৃতিকে হারিয়ে যেতে দেয় না। ফটোগ্রাফি সবার জন্য খুব প্রয়োজন। ‘
অনেকেরই ধারণা, আলোকচিত্র কিংবা ফটোগ্রাফি পুরোটাই একটি ব্যবহারিক বিষয়। এখানে খাতা-কলম ধরে পড়াশোনার জায়গা কম। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ঘরে বসে আপনি হয়তো ক্যামেরা চালানো শিখতে পারবেন। ছবির ফ্রেম, কম্পোজিশন কিংবা আলোক প্রক্ষেপণের মতো কারিগরি দিকগুলো হয়তো ছবি তুলতে তুলতে শিখে নিতে পারবেন। কিন্তু একজন পেশাদার আলোকচিত্রী হিসেবে ছবি যাচাই-বাছাই করা, ছবি নিয়ে বিশ্লেষণ করতে পারার জ্ঞান নিতে হলে এ বিষয়ে গভীরভাবে জানা
জরুরি।
নিজ হাতে ক্যামেরা নিয়ে কিছু প্রিয় মুহূর্ত বন্দী করার শখ থেকেই হয়তো ছবি তোলা শিখেছেন অনেকে। তবে এই শখ পূরণের পাশাপাশি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে যদি ছবি তোলার বিস্তারিত শিখতে পারেন, তাহলে নিশ্চয় মন্দ হবে না।
আমরা আমাদের ক্লাব থেকে প্রতি মাসে ওয়ার্কশপ এবং ফটোওয়াকের আয়োজন করে থাকি। যেখানে সবাইকে একটা ছবি কিভাবে তুলতে হবে, কিভাবে ছবি জাজ করতে হয় এই বিষয়গুলো সম্পর্কে শেখানো হয়৷ স্কুল কলেজের প্রতিটি অনুষ্ঠানেই এখন ক্লাবের মেম্বারই ফটোগ্রাফি করে থাকে।
আমাদের ক্লাবের মেম্বারদের অর্জন হিসেবে রয়েছে ৬ টি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের এওয়ার্ড এবং ১৮টি জাতীয় পর্যায়ের এওয়ার্ড। এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধশতাধিক অনুষ্ঠানে ফটোগ্রাফি ক্লাবের মেম্বাররা কভার করেছে।
ভালো মানের ছবির জন্য প্রতিবছর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এসব প্রতিযোগিতায় রয়েছে খ্যাতি আর ভালো অঙ্কের অর্থ পুরস্কার।
আমরাও আমাদের ক্লাব থেকে এধরণের জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন ইভেন্ট করার পরিকল্পনা করছি। সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজকে যেন বিশ্বব্যাপি অনন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে তুলে ধরার জন্য আমাদের এই ক্লাব যেন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রাখে সেই লক্ষ্যকে নিয়ে আমরা কাজ করে যেতে চাই।